০৩ নভেম্বর ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ 

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংস্কারে বিসিবির উদ্যোগ 

ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংস্কারে বিসিবির উদ্যোগ 

সংস্কারের অভাবে দীর্ঘ বছর যাবৎ জীর্ন অবস্থায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম যেটি ‘ফতুল্লা স্টেডিয়াম’ বলে অধিক পরিচিত। এই স্টেডিয়ামের আন্তর্জাতিক মান পুনরায় ফেরাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি’র পরিচালক আকরাম খান বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়নের স্বার্থে আন্তর্জাতিক এই ভ্যেনুর সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি। ইতোমধ্যে কাজও শুরু হয়ে গেছে। আগামী মৌসুমে সংস্কার কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

২০০০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কের পাশে নির্মিত স্টেডিয়ামটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৬ সালের ২৩ মার্চ এ স্টেডিয়ামে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয় কেনিয়ার।

সবশেষ ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের কয়েকটি ম্যাচ গড়ায় ২৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার এই স্টেডিয়ামে।

এরপর থেকে সংস্কারের অভাবে আন্তর্জাতিক মানের এই স্টেডিয়ামটি কেবল নামেই ‘আন্তর্জাতিক’ হিসেবে রয়ে গেছে। মূল মাঠের ডিজিটাল স্কোরবোর্ড অকেজো, ফ্ল্যাডলাইট সব চুরি হয়ে গেছে, দর্শক ছাউনি ও আসন ভাঙা, প্রেস বক্সে বসার মত অবস্থা নেই, ভিআইপি গ্যালারি আর খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুমও ব্যবহারের অনুপযোগী।

ওদিকে আউটার স্টেডিয়াম থাকে কচুরিপানায় ভরপুর, একপাশে হয় সবজির চাষ। বর্ষা মৌসুমে থৈ-থৈ পানি গড়িয়ে আসে মূল মাঠের মধ্যে। এমনকি স্টেডিয়ামের নামফলকের লেখাটিও উঠে গেছে।

তবে বিসিবি বলছে, মাঠটিকে সংস্কার করে অন্তত খেলার উপযোগী করার উদ্যোগ তারা নিয়েছেন। পরবর্তীতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বাংলাদেশ (এনএসসি’বি) সামগ্রিক সংস্কারের কাজ করবে। এজন্য বিসিবি’র পক্ষ থেকেও চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।

আকরাম খান বলেন, ‘এই স্টেডিয়ামে আমাদের অনেক স্মৃতি আছে। এইখানে আমরা অস্ট্রেলিয়ার সাথে টেস্ট ছাড়াও অনেক বড় বড় ম্যাচ খেলেছি। যেকোন কারণেই হোক মাঠটিকে পুরোপুরি আমরা পাচ্ছিলাম না। খেলারও উপযোগী ছিল না। যদিও সংস্কার কাজটি এনএসসি’র করার কথা। কিন্তু ওনাদের কাজটি করতে সময় লাগবে, এই কারণে বোর্ড সভাপতি বিসিবি’র টাকায় উন্নয়ন কাজটা করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিজনে না হলেও পরের সিজনে ভ্যেনুটিকে একটা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডে তৈরি করে দিতে পারবো। এটা করতে পারলে খেলোয়াড়রা ভালো সুযোগ পাবে এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের উপকার হবে।’

খেলোয়াড়দের সুবিধার জন্য ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অনেকগুলো মাঠ নিয়ে কাজ করার ভাবনা রয়েছে বলে জানান বিসিবি’র এই পরিচালক। আপাতত খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামটিকে খেলার উপযোগী করতে অন্তত ৬ ফুট উচু করতে হবে বলে জানান বিসিবি’র অপর পরিচালক তানভীর আহমেদ টিটু। তিনি বলেন, ‘ডিএনডি এলাকার ভেতরে হওয়ার কারণে মাঠটিতে জলাবদ্ধতার সমস্যা রয়েছে। তবে ডিএনডি’র জলাবদ্ধতা দূরীকরণে সরকার প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। আমারও মাঠটিকে উচু করছি, সুতরাং মাঠে আর জলাবদ্ধতার সমস্যাটা থাকবে না।’

টিটু বলেন, এই স্টেডিয়ামটির উপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের করা নিরীক্ষা অনুসরণ এবং এনএসসি’র সাথে পরামর্শ করেই উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যাতে পরবর্তীতে এনএসসি সামগ্রিক সংস্কার কাজের উদ্যোগ নিলে কোন প্রকার সমস্যা তৈরি না হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্টেডিয়ামটিতে নিয়মিত খেলা শুরু হলে তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারটির দিকেও আলাদা নজর দিবে কর্তৃপক্ষ। কেননা ভ্যেনুটি দেখভালের জন্য এনএসসি’র একজন প্রশাসক ও বিসিবি’র পক্ষ থেকে ভ্যেনু ম্যানেজার থাকবেন।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নিয়ে এখনও আশাবাদী আকরাম খান

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভারতে চলমান বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পারফর্মেন্স নিয়ে এখনও আশাবাদী বলে জানান আকরাম খান।

তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানকে হারানোর মধ্য দিয়ে আমাদের শুরুটা আমাদের খুবই ভালো হয়েছিল। বড় টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ জিতলে মানসিকভাবে অনেক সাপোর্ট পাওয়া যায়। তারপরও তিনটা ম্যাচে আমাদের আকাঙ্খা অনুযায়ী সফলতা পাইনি। এখনও পাঁচটা ম্যাচ আছে। তবে আমাদের সেমিফাইনাল খেলার যে আশা ছিল তা কঠিন হয়ে গেছে।’

‘আফগানিস্তান দুইটা বড় দলকে হারিয়েছে। আমাদেরকেও দুইটা থেকে তিনটা বড় দলকে হারাতে পারলে, নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারলেও একটা ভালো অবস্থানে যাবো। আশা করি, বাংলাদেশ যে স্ট্যান্ডার্ডে ক্রিকেট খেলে ওরা যেন ওই নরমাল ক্রিকেটটা খেলতে পারে, তাহলে আমরা ভালো কিছু এচিভ করতে পারবো।’, যোগ করেন তিনি।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়