২৬ এপ্রিল ২০২৫

প্রকাশিত: ১৭:৫৫, ২৪ মার্চ ২০১৮

লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসবের ইতিহাস

লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসবের ইতিহাস

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: প্রতিবছর চৈত্র মাসের শুক্লা তিথিতে লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের স্নানোৎসব শুরু হয়। মহা ভারতের বর্ণনা মতে পরশুরাম মুনি পাপ মুক্তির জন্য ব্রহ্মপূত্র নদের যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন, তা লাঙ্গলবন্দ অবস্থিত। সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস বহ্মপূত্র নদে স্নান খুবই পূণ্যের। এ স্নানের ফলে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাপমোচন হয়। এ বিশ্বাস নিয়ে সুদীর্ঘকাল ধরে এ স্নানে অংশ নেওয়ার জন্য পৃথিবীর এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান লাঙ্গলবন্দে মহাষ্টমী স্নানোৎসবে। শত শত বছর ধরে চলা এই স্নানোৎসবকে ঘিরে আছে নানান গল্প।

পৌরাণিক ইতিহাস মতে, পুরোকালে ত্রেতা যুগের শুরুর দিকে জমদগ্নি নামে একজন বিশিষ্ঠ ব্রাহ্মণ ছিলেন। তিনি সূর্যবংশীয়কন্যা রেণুকা কে পত্নী রুপে বরণ করেণ। কিছুকাল পর তাদের ঘর আলো করে ভগবান বিষ্ণু পরশুরাম রুপে আর্বিভূত হোন। পূর্বজন্মের তপস্যার দ্বারা তারা ভগবান কে সন্তান রুপে পেয়েছেন। কিন্তু রেণুকার সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জমদগ্নির বিবাদ লেগেই থাকত। একবার রেণুকা তার স্বামী জমদগ্নি কে কিছু না বলে পিতার গৃহে চলে যান। এতে ক্রুদ্ধ হয়ে জমদগ্নি তার ছেলে পরশুরাম কে আদেশ করেন তার মা রেণুকার শীরচ্ছেদ করতে। পরশুরাম বিচলিত হয়ে ওঠেন! সে তার পিতার আদেশ অমান্য করবে নাকি মাতৃহত্যার বোঝা বহন করবে। উভয় সংকটে পরে যায় পরম শিবভক্ত পরশুরাম। পরশুরাম তার মায়ের কাছে যায় এবং সবকথা খুলে বলে। পিতা আদেশ দিয়েছেন মায়ের শীরচ্ছেদ করবার। পরশুরামের মা ছিলেন সত্যপরায়ণা তাই তিনি তার ছেলে পরশুরামকে আদেশ দিলেন সে তার পিতার আদেশ রক্ষা করুক এবং তিনি নিজে তার মস্তক ছেদ করবার জন্য প্রস্তুত করলেন। বুকে পাথর চাপা দিয়ে পরশুরাম তার মায়ের শিরচ্ছেদ করলেন। শিরচ্ছেদ করবার পর ভগবান শিবের কৃপায় তিনি আবার জীবিত হয়ে উঠলেও পরশুরামের মাতৃহত্যার পাপ রয়ে যায়।সেই মাতৃহত্যার পাপের বোঝায় পরশুরাম উন্মাদ হয়ে এদিক সেদিক ছুটতে থাকে। পরবর্তীতে ভগবান শিবের তপস্যা করে উনাকে সন্তুষ্ট করে তার পাপ নিবারণের রাস্তা জেনে নেন। ভগবান শিব তাকে বলেন হিমালয়ের কৈলাশ পর্বতের নিচের মানস সরবরের থেকে যেই নদ তৈরী হয়েছে তাতে স্নান করলে তার পাপ ধূয়ে যাবে।

যেই কথা সেই কাজ। পরশুরাম সেই নদীতে স্নান করেন এবং পাপমুক্ত হোন। আর সেই নদেই হল বর্তমান পুরাতন ব্রহ্মপুত্র আর যেই স্থানে স্নান করেন সেটাই ছিল লাঙ্গলবন্দ আর তিথিটা ছিল চৈত্রের অষ্টমী।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়