২২ নভেম্বর ২০২৪

প্রকাশিত: ১৯:৩০, ১৮ জুন ২০২০

আপডেট: ১১:২৭, ১৯ জুন ২০২০

রাতভর টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতায় নারায়ণগঞ্জ

রাতভর টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতায় নারায়ণগঞ্জ

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: রাতভর টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ। বঙ্গবন্ধু সড়কসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে জমেছে পানি। সড়কের পাশের দোকানপাট ও মার্কেটেও পানি ঢুকে গেছে। শহরতলীর বিভিন্ন এলাকাতেও জমেছে হাটু সমান পানি। অতিরিক্ত বর্ষণে পাড়া-মহল্লায় ও বাসা-বাড়িতে পানি উঠায় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) বাঁধের ভেতরের ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দারা।

বুধবার (১৭ জুন) দিবাগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) সকাল ৮টা নাগাদ টানা বর্ষণে নগরীর প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়ক, কলেজ রোড, সিরাজউদ্দৌলা সড়ক, খানপুর, গলাচিপার মোড়, দেওভোগ পাক্কা রোড, উকিলপাড়াসহ নগরীর একাধিক এলাকায় হাটু সমান পানিতে ডুবে যায়। পাশাপাশি এসব এলাকায় বসবাসরাত বাসা-বাড়ি, দোকান, মার্কেটগুলোকেও ঢুকে পড়ে পানি। সড়কে পানি জমে থাকাতে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। সড়ক ছেড়ে ফুটপাতগুলোতেও পানি উঠে যাওয়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে পথচারীদেরও। রাতভর ভারী বর্ষণ তার উপর সড়কের উপর ফেলা প্লাস্টিক-পলিথিনের কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের দুই পাশেই চাষাঢ়া থেকে ২নং রেলগেইট পর্যন্ত হাটু সমান পানি। যার ফলে বাস, সিএনজি, রিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। যদিও বেলা বাড়ার সাথে সাথে পানির পরিমাণ কমতে থাকে।

দেওভোগ এলাকায় দেখা যায়, স্থানীয়রাই রাস্তার পাশের স্লাবগুলো তুলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছিলেন। দুপুর ২টার দিকে পানির পরিমাণ কিছুটা কমে যায়। যার ফলে যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলতে শুরু করে। কিন্তু সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন বাসা-বাড়িতে বসবাসরত পরিবারগুলো। রাতভর বৃষ্টির ফলে ঘরের ভেতর হাটুসমান পানি উঠে যাওয়ায় তাদের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হচ্ছে।

দেওভাগ পাক্কা রোডের বাসিন্দা হৃদয় সরকার জানান, সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠেই দেখি বৃষ্টির পানি বাসার খাটের অর্ধেক পর্যন্ত উঠে গিয়েছে। রান্না ঘরের চুলা পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। দুপুর দেড়টা বেজে গেছে এখন পর্যন্ত নাস্তা করা হয় নাই চুলা পানির নিচে থাকায়। সকাল থেকে শুধু পানি সেচে যাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধু সড়কের রাস্তার পাশের মার্কেটগুলোতেও হাটু সমান পানি উঠে যাওয়ায় সকাল থেকেই ক্রেতা সমাগম ছিল না। যার ফলে সকাল থেকেই অলস সময় কাটাচ্ছিলেন দোকানিরা। সমবায় মার্কেটের দোকানদার শুভ জানান, সকালে মার্কেটে এসেই দেখি পানি জমে গেছে। সকাল থেকেই পানি সেচে পানি বের করছি। পানি বেশি থাকার কারণে কোন ক্রেতাই দোকানে আসতে পারছে না।

গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও বুধবার রাতের ভারী বর্ষণের পর ডিএনডির বাঁধের ভেতরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার টাগারপাড়, ইসদাইর, গাবতলী, উত্তর মাসদাইর, দক্ষিণ সস্তাপুর, সস্তাপুর, কোতালেরবাগ, সেহাচর, লাল খাঁ, লামাপাড়া, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি, পাইনাদিসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, শিল্পকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় হাঁটু পানি জমে গেছে। আবার কোনো কোনো এলাকায় কোমর পানি উঠে গেছে।

ডিএনডি পাম্প হাউস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে বাঁধের ভেতরে যে পরিমাণ জমে সেই পানি নিষ্কাশন করতে সময় লাগে ১০ দিন। তাই বৃষ্টিপাত না হলে আগামী ৫ থেকে ১০ দিন সময় লাগবে পানি নিষ্কাশন করতে। করোনার কারণে জনবল সংকটে পানি নিষ্কাশন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য ডিএনডি প্রকল্পের স্থাপিত ২৯৮ কিউসেক ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পাম্প চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সেনাবাহিনী।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়