হেফাজতের নামে কোনো কর্মসূচি না করার আহ্বান আলেমদের

নারায়ণগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে চলমান বিরোধের প্রেক্ষিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়ালসহ জেলার শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন আলেম হেফাজতে ইসলামের নামে সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) মাওলানা আব্দুল আউয়ালের ফেসবুক পেজ থেকে এ সংক্রান্ত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় সাব-কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী আব্দুল আউয়ালের তত্ত্বাবধানে নারায়ণগঞ্জের তিন শতাধিক উলামা ও ইসলামী নেতৃবৃন্দের সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু শীর্ষস্থানীয় আলেমদের উপেক্ষা করে গুটিকয়েক ব্যক্তি একটি বিতর্কিত ‘পকেট কমিটি’ ঘোষণা করে, যা তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেন জেলার আলেমসমাজ।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বিতর্কিত কমিটি স্থগিত ঘোষণা করেন এবং নারায়ণগঞ্জে এসে সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে কিছু ব্যক্তি এখনো বিতর্কিত কমিটির পরিচয়ে হেফাজতের ব্যানারে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন, যা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে বলে মন্তব্য করা হয়।
এ প্রসঙ্গে নেতারা বলেন, “২৫ এপ্রিল চাষাঢ়ায় হেফাজতের নামে গণজমায়েতের প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। মিমাংসার আগ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে হেফাজতের নামে কোনো সমাবেশ বা কর্মসূচি দেখতে চাই না। কেউ আয়োজন করলে আমরা তা বয়কট করবো।”
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও ডিআইটি মসজিদের খতীব আল্লামা আব্দুল আউয়াল, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও আমলাপাড়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল কাদির, দেওভোগ মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, আলীরটেক মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ আতাউল হক সরকার, নারায়ণগঞ্জ উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতী জাকির হুসাইন কাসেমী, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা মুফিজুল ইসলাম, সাইনবোর্ড আশরাফিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী মুফিজুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এবিএম সিরাজুল মামুন, মহানগর সভাপতি হাফেজ কবির হোসাইন, খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি, জামিয়া কাসিমিয়া ভুইগড়ের মুহতামিম মাওলানা ইসমাঈল আব্বাসী, দারুল কোরআন রূপগঞ্জের মুহতামিম মাওলানা বদরুল আলম সিলেটী, দেওভোগ মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আব্দুর রহমান, কারিমীয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আবু সায়েম খালেদ, হাজীপাড়া মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম মুফতী আব্দুল আহাদ, শিক্ষাসচিব মুফতী মাহমুদুল হাসান, হাজীগঞ্জ মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী ইমরান হোসাইন, চাষাঢ়া বাগে জান্নাত মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী আব্দুর রহীম, হাজী সাইজুদ্দীন মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী আবু নাসের, বন্দর মাহমুদিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী আবুল কাসেম, হাজী শাহজাদী মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা নুরুল আমীন তালিমী, ফতুল্লা ইমাম সমাজের সভাপতি মাওলানা আবু বকর সিদ্দীক কাসেমী, তালতলা মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মহিউদ্দিন খান, ইবনে আব্বাস মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী উসমান গনী, ফতুল্লা উলামা কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মুফতী ফয়জুল্লাহ, আড়াইহাজারের মাওলানা আইয়ুব, মাওলানা ফারুক আহমদ, সোনারগাঁও উলুকান্দী মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী জহীরুল ইসলাম ফারুকী, লাধুরচর মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী আবু বকর কাসেমী, পরমেশ্বরদী মাদ্রাসার মুফতী নুরুল্লাহ হাশেমী, সিরাজুল উলুমের মুহতামিম মুফতী শেখ শাব্বীর আহমাদ, পুলিশলাইন মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আলী আহমদ, আইলপাড়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মুজিবুর রহমান, বায়তুল হিদায়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী আব্দুল গনী, আহমাদিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী সায়েম আহমদ, সিরাজুল উলুম তারাব মাদ্রাসার মাওলানা আবু তাহের, জামিয়া ইসলামিয়া যিন্নুরাইনের মুহতামিম মুফতী লোকমান সালেমী, দারুল উলুম রুপগঞ্জের মুহতামিম মাওলানা আব্দুল মান্নান সিরাজী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি জাকির হুসাইন কাসেমী বলেন, “নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর হেফাজতে ইসলামের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। কেউ কেউ হেফাজতে ইসলামের নামে কর্মসূচি দিয়েছে। এটা বিতর্ক ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য তারা করছেন। এই ধরনের কর্মসূচি নারায়ণগঞ্জের সকল ওলামাগণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।