শ্রমিক নেতা সেলিম মাহমুদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল

বাসদ নেতা, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি সেলিম মাহমুদের নিঃশর্ত মুক্তি, শ্রমিক নেতৃবৃন্দের নামে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য এস.এম কাদির, বাসদ বর্ধিত ফোরামের সদস্য প্রদীপ সরকার, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ এবং সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আক্তার।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার রাত দেড়টায় ফতুল্লার বাসা থেকে সেলিম মাহমুদকে যৌথ বাহিনী গেট ভেঙে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এমনকি তার ৯ম শ্রেণির ছেলেকে লাঞ্ছিত করা হয়। অথচ থানায় তার বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল না। নেতাদের প্রশ্ন, “শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোই কি তার অপরাধ?”
তারা বলেন, সেলিম মাহমুদ ছিলেন সেই নেতা যিনি রবিনটেক্স কারখানার ইউনিয়ন গঠনের চেষ্টাকারী শ্রমিকদের পাশে ছিলেন। এ কারণেই কারখানা কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের সমন্বিত চক্রান্তে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একইসঙ্গে ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ২২ জন শ্রমিককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নেতারা বলেন, "একদিকে সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলছে, অন্যদিকে ৭৪-এর বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে শ্রমিক নেতা ও সংগঠকদের দমন করছে। এটি স্পষ্টতই সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্র প্রকাশ করে।"
তারা আরও বলেন, "রবিনটেক্স কারখানায় শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকেই কর্তৃপক্ষ তা দমন করতে নানা কৌশল গ্রহণ করেছে। চলমান ইউনিয়ন নিবন্ধনের প্রক্রিয়া অমীমাংসিত থাকা অবস্থায় শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করা, প্রবেশে বাধা দেওয়া, এমনকি মিথ্যা মামলায় হয়রানি করার ঘটনা ঘটছে। অথচ শ্রম আইনে এসব সম্পূর্ণ অবৈধ। শ্রম প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাই মালিকদের এই অমানবিক চর্চায় উৎসাহ দিচ্ছে।"
বক্তারা বলেন, “বর্তমান সরকারের দায়িত্ব ছিল শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু বরং পূর্ববর্তী সরকারের মতোই এই সরকারও শ্রমিকদের কণ্ঠ রোধ করছে। এর পরিণতি শুভ হবে না।”
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন।