এবার তোলারাম কলেজের সামনে আজমেরীর পোস্টার ’শেখ হাসিনাতেই আস্থা’
এবার নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের সামনে সাঁটানো হলো আজমেরী ওসমানের পোস্টার৷ গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যরাতে কলেজের প্রধান গেটের সামনে এ পোস্টার সাঁটানো হয়৷
এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সিএনজি চেপে তিনজন তরুণ বয়সী ছেলে সরকারি তোলারাম কলেজের মূল গেটে পোস্টার সাঁটিয়ে তার ছবি তোলেন এবং পরে সিএনজিতে চড়েই স্থান ত্যাগ করেন৷
আজমেরী ওসমান আলোচিত তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার অন্যতম আসামি৷ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আজমেরী ওসমান ও তার অনুসারীদের প্রকাশ্যে গুলি চালাতেও দেখা গেছে৷
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থান ও সরকারি দপ্তরের দেয়ালে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। পোস্টারে গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ‘গডফাদার’ খ্যাত সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও তার ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়নের ছবি দেখা যায়।
নিষিদ্ধ এই ছাত্র সংগঠনের এই পোস্টারিং-এর বিরুদ্ধে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা একত্রে শহরে বিক্ষোভ মিছিলও করেছেন। তারা পোস্টারিং করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানিয়েছেন।
যদিও, এখন পর্যন্ত পুলিশ বা প্রশাসন পোস্টারিং করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পারেনি৷
তবে, জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পোস্টারিং করা ব্যক্তিদের কয়েকজনকে তারা চিহ্নিত করেছেন৷ দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে৷
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের পোস্টার সাঁটানো হয়। সরকারি তোলারাম কলেজ, জেলা পরিষদের ডাক বাংলো, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের দেয়ালসহ কয়েকটি স্থানে এসব পোস্টার সাঁটানো হয়েছে।
গত জুলাই-আগস্টে নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে শামীম ওসমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন। শামীম ওসমানের নেতৃত্বে তার ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুসহ অনুসারী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী-জনতার উপর অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছেন। তাদের এই সশস্ত্র হামলার ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে।
জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে নারী ও শিশুসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৯ জুলাই ডিআইটি এলাকায় নিজ বাসার ছাদে খেলার সময় ৬ বছর বয়সী রিয়া গোপও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওইদিন শামীম ওসমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী প্রকাশ্যে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে আন্দোলনকারীদের দমাতে নির্বিচারে গুলি চালায়। ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্তও ছিল শামীম ওসমানের সন্ত্রাসী বাহিনীর সশস্ত্র মহড়া।
আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালানো ব্যক্তিদের ছবি সম্বলিত ছাত্রলীগের পোস্টারিং নিয়ে ক্ষুব্দ সাধারণ শিক্ষার্থী ও নারায়ণগঞ্জের লোকজন।