তারেক রহমানের কর্মশালায় উপেক্ষিত কালাম অনুসারীরা
রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তবে, এ কর্মশালায় দেখা মেলেনি মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ও তার অনুসারী নেতাদের। তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কালাম ও তার অনুসারীরা এ আয়োজনে ছিলেন উপেক্ষিত। তাদের আমন্ত্রণও জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।
যদিও, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন বলছেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দাওয়াত পেয়েছেন নেতারা।
মহানগর বিএনপি সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে বিভক্তি বেশ কয়েক বছর ধরে দৃশ্যমান। মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম থাকার সময়েই তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে আলাদা বলয় তৈরি হয়। সবধরনের কর্মসূচি মহানগর বিএনপির ব্যানারে আলাদাভাবে পালন করতেন কালাম ও সাখাওয়াত অনুসারীরা। আবুল কালাম শারীরিকভাবে অসুস্থা হয়ে পড়লে এক পর্যায়ে কর্মসূচিগুলোতে তার উপস্থিতি কমতে থাকে। এক পর্যায়ে মহানগর কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হলে নেতৃত্বে আসেন সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ৪১ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক করা হয় সাখাওয়াতকে এবং সদস্যসচিব হন টিপু। এতে কালাম অনুসারীরা বেঁকে বসেন। তারা বিদ্রোহ করে পদত্যাগেরও সিদ্ধান্ত নেন। যদিও দলীয় কর্মসূচি সাখাওয়াত-টিপুর নেতৃত্বেই গত দুই বছর ধরে পালন করে আসছেন নেতা-কর্মীরা। তারেক রহমানের এই কর্মশালায় আবুল কালাম ও তার অনুসারী নেতাদের অনুপস্থিতি মহানগর বিএনপির বিভক্তিকে আরও স্পষ্ট করেছে।
কর্মশালায় উপস্থিত নেতাদের সূত্রে জানা যায়, ৩১ দফা নিয়ে কর্মশালায় বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, কৃষক দলসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সাখাওয়াত হোসেন খান। তবে, দেখা যায়নি আবুল কালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর সেন্টু, আতাউর রহমান মুকুল, আবুল কাউসার আশাসহ তাদের অনুসারী নেতাদের।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আবুল কালাম মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘আমন্ত্রণের বিষয়টি যারা আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন তারা বলতে পারবেন। আমি এগুলো বলতে চাচ্ছি না। দলের স্বার্থের জন্য এই মুহুর্তে বক্তব্য দিতে চাচ্ছি না। কেন্দ্র এই বিষয়ে সবই অবগত।’
বিএনপির নির্বাহী কমিটির নেতা হওয়া সত্ত্বেও আবুল কালাম এই কর্মশালার আমন্ত্রণ পাননি বলে জানিয়েছেন তার ছেলে আবুল কাউসার আশা। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ মহানগরে নেতৃত্ব দিয়েছেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। অথচ তাকেও পর্যন্ত এই প্রোগ্রামের বিষয়ে জানানো হয়নি। আমন্ত্রণ তো পরের কথা। কেন এমনটা করেছেন সেই ব্যাখ্যা ওনারা দিতে পারবেন।’
তবে, দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী নেতাদের নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে দাবি মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানের। তিনি বলেন, ‘এইটা তো কারও ব্যক্তিগত প্রোগ্রাম না। এটা একটা প্রশিক্ষণ কর্মশালা। এখানে প্রতিটি কমিটির সুপার ফাইভ অর্থ্যাৎ সভাপতি, প্রথম সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, প্রথম যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর যাদের কথা বলছেন, তারা তো বিগত সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিল না। পনেরো বছর তারা কর্মসূচিতে ছিলেন না। তিনি (আবুল কালাম) তো অসুস্থ। সেন্ট্রালি যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেভাবেই কাজ করেছি।’