ডেঙ্গুর প্রকোপ: সিভিল সার্জন কার্যালয় ঘেরাও করবে গণসংহতি
নারায়ণগঞ্জে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও সিভিল সার্জনের ব্যর্থতার প্রতিবাদে গণসংহতি আন্দোলন পথসভা করেছে। এই পথসভা থেকে সিভিল সার্জন কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিরও ঘোষণা দিয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকালে শহরের ডনচেম্বার মোড়, খানপুর হাসপাতাল, সরদারপাড়া, খানপুর বউবাজার ও মিশনপাড়া এলাকায় এ পথসভা করেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
পথসভায় বক্তারা বলেন, ‘আমরা দেখেছি খানপুর ও ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ধীরে ধীরে কীভাবে ডেঙ্গু বৃদ্ধি পাচ্ছে। মশা নিধনে ঠিকমতো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। আমরা দেখেছি অল্প বৃষ্টি হলেই নারায়ণগঞ্জ শহর সমুদ্রের শহরে পরিণত হয়। আর অন্যান্য অঞ্চলের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে দাঁড়ায়। এই জলাবদ্ধতার শহরে মশা নিধনের কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল বর্ষা মৌসুমের আগেই। কিন্তু তা হয়নি। যখন এই মশার কারণে এলাকার মধ্যে অনেক মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে এলাকাগুলোতে মহামারীর রূপ ধারণ করছে, সেই সময় যখন এলাকার লোকজন তা প্রতিরোধে কর্মসূচি নিতে চায়, সেখানেও পর্যন্ত প্রসাশন সহযোগিতা করে না।’
প্রশাসনিক লোকজনের মধ্যে আওয়ামী লীগের আমলের মতোই উদাসীনতা দেখতে পাচ্ছেন বলে অভিযোগ বক্তাদের।
তারা আরও বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর দেখি, শুধুমাত্র মশা নিধন কর্মসূচিতে লক্ষ-কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ হয় এবং সেখানে মশা মারার বাণিজ্য হয়। সেই মশা মারার বাণিজ্য তো স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সময়ও ছিল। তাহলে এখন এই গণ-অভ্যুত্থানের বাংলাদেশে একই বাণিজ্য হচ্ছে কিনা এই প্রশ্নটি আমরা রাখতে চাই।’
গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্যসচিব মানিক হাওলাদারের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজালাল খন্দকার।
শাহজালাল খন্দকার বলেন, ‘জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস এডিস মশার প্রজনন কাল হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এডিস মশার প্রজনন রোধে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। যার কারণে এখন ঘরে ঘরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বিগত কয়েক বছর যাবত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের গ্রাফ ঊর্ধ্বমূখী। আমরা বার বার সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু নাসিক প্রশাসন ডেঙ্গু প্রতিরোধে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল ও বাসা বাড়িতে অসংখ্য ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গু এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। এখনই ডেঙ্গু প্রতিকারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নারায়ণগঞ্জের মানুষজন জীবন নিয়ে হুমকিতে পড়বে।’
এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব, জেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম, নারী সংহতির জেলা আহ্বায়ক নাজমা বেগম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, সহসভাপতি সাইদুর রহমান, মহানগর কমিটির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. বকুল, ১২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য স্বাধীন মিয়া, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড সংগঠক জয়দেব প্রমুখ।