নির্বিঘ্নে লালন মেলা আয়োজনের ব্যবস্থার দাবি ছাত্র ফেডারেশনের
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মধ্য নরসিংহপুর গ্রামে শুরু হতে যাওয়া লালন মেলা নির্বিঘ্নে পালন এবং কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন না ঘটে তার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা এবং সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহা। বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানান তারা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জ এর সদর উপজেলার মধ্য নরসিংহপুর গ্রামে প্রতি বছর পালিত হয় "মহতি সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা"। মুক্তি ধাম আশ্রম এবং লালন একাডেমির আয়োজনে ২ দিনব্যাপী এই মেলা জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে আয়োজিত হয়। তবে এ বছর মেলা বন্ধের নানাবিধ চেষ্টা দেখা যাচ্ছে যা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মানুষের মত প্রকাশ ও উৎসব পালনের স্বাধীনতা পরিপন্থী। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্ম-মতের একত্রে বসবাস। আঠারো কোটি মানুষের এ দেশে আউল, বাউল, ফকির, সন্ন্যাসী, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, আদিবাসী এবং বাঙালি সম্প্রতি বজায় রেখে এক সাথে বসবাস করে। এই ঐক্যবদ্ধতা গত ৫ই আগষ্ট ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জনগণের বিজয়কে তরান্বিত করেছে। এই ঐক্যবদ্ধতা নষ্টের সকল প্রকার পায়তারাকে আমরা বিগত পরাজিত শক্তির দোসর হিসেবে চিহ্নিত করবো।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা বলেন, বাংলাদেশ একটি সম্প্রীতির দেশ। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, বাউল, সন্ন্যাসী, আদিবাসী, বাঙালী সকলে একসাথে মিলেমিশে আমরা বসবাস করি। আমাদের সম্প্রীতি আমাদেরকে শক্তির যোগান দেয়। কাশিপুর ইউনিয়নের অনুষ্ঠিত লালন মেলা বন্ধের পায়তারা এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা খুবই নিন্দনীয় বলে আমরা মনে করি। নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্য সকল ধর্মমতের সহাবস্থান আমাদেরকে বজায় রাখতে হবে। আমরা জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারকে আহ্বান করবো আপনারা অতিদ্রুত এর ব্যবস্থা নিবেন। অন্যথায় অপ্রীতিকর ঘটনার দায়ভার প্রশাসনকেই নিতে হবে। সুন্দর, সুষ্ঠ ও নির্বিঘ্নে লালন মেলা আয়োজন এবং নারায়ণগঞ্জ এর সম্প্রীতি বজায় রাখতে আমাদের নারায়ণগঞ্জবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে সেই আহ্বান রাখি।
সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহা বলেন, এ বছর লালনের আড়াইশ তম জন্মবর্ষ। লালন তার মানবতার বাণী প্রচারের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশে নয় সাড়া বিশ্বে পরিচিতি অর্জন করেছেন। আউল, বাউল, সাধু, সন্নাসীদের এই দেশে লালন মেলা বন্ধের পায়তারাকে আমাদের রুখে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সকল মতের সহাবস্থানের আকাঙ্খা থেকে আমরা জুলাই গণ অভ্যূত্থান গড়ে তুলেছিলাম।