গডফাদার বলতো খেলা হবে, আজ সে কোথায়: হাবিব উন নবী
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, সে ছিল ড্রাকুলা, বট গাছের শাঁকচুন্নি। ইদানীং ফেসবুক খুললেই দেখবেন আসিতেছে। তিনি নাকি আশেপাশেই আছেন। যাদের একসময় মাথায় হেলমেট, হাতে অস্ত্র ছিল, যারা চাপাতি লীগ ছিল, তারা এখন ফেসবুক নিয়ে পড়ে আছে।
শনিবার (২ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের মিশনপাড়া এলাকায় হোসিয়ারি সমিতিতে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ঢাকা বিভাগীয় কর্মী সভায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ফেসবুকে দেখি উনি আসছে। মানুষ আজ আওয়ামী লীগের নাম দিয়েছে আফসোস লীগ। তাদের আফসোস আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম। অবৈধ প্রধানমন্ত্রী নিজ মুখে বলত আমার বাড়ির ড্রাইভার চারশো কোটি টাকার মালিক। এটা আমাদের কথা না। শেখ হাসিনার নিজের মুখের কথা। সে হেলিকপ্টারে যাতায়াত করে। তাহলে তিনি কত টাকাম মালিক একবার ভাবুন।
তিনি বলেন, কদিন না যেতেই নেত্রীকে দেশে আনতে চান। আপনাদের নেত্রী দেশে আসবেন, তবে কয়েদির পোশাক পড়ে আসবেন। বেগম খালেদা জিয়াকে জেলখানার যে ঘরে রেখেছিলেন সেই ঘরেই আপনি থাকবেন।
তিনি বলেন, জয়ের সম্পদ আমেরিকার বড় বড় ধনকুবেরের চেয়ে কম নয়। দেশকে পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিয়ে পুতুল এখন পঙ্গুদের নিয়ে কাজ করেন। শেখ রেহানাকে পার্সেন্টেজ না দিয়ে দেশে ব্যাবসা করা যেত না।
আওয়ামী লীগের নেতারা ধরা পড়লেই তাদের সাথে টাকার বান্ডেল ধরা পড়ে। আমির হোসন আমু জাজিম বানিয়েছেন টাকা দিয়ে। তার বেডরুমে টাকা সাজানো থাকত। আপনারা এগুলো কী আর হতে দেবেন।
বাংলাদেশ দালালে ভরপুর। দেশী নয়, বিদেশি দালাল। বাংলাদেশের মানুষ চাকরি পায় না। আমাদের তরুণরা যোগ্যতা থাকার পরেও চাকরি পায় না। আর অন্য দেশের দালালরা এখানে এসে চাকরি করে টাকা নিয়ে যায়। আমরাও দালাল, তবে আমরা বাংলাদেশের দালাল। বাংলাদেশের মাটি থেকে অন্য দেশের দালালি করলে আপনাদের সাথে আমাদের সংঘাত অনিবার্য। এটা কেউ ঠেকাতে পারবে না।
উত্তরের মেয়র আতিক সাহেব ইচ্ছে হল আর তার মেয়েকে চাকরি দিলেন। হিট অফিসার, জীবনেও শুনিনি। বিশ্বের বহু দেশে আমি গিয়েছি। হিট অফিসার বলতে কোন কিছুর নাম আমি শুনিনি।
শুধুমাত্র মিলাদ মাহফিলের জন্য ডাকা হয় এমন ওলামা দল আমরা চাই না। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে একজন স্বৈরশাসক ক্ষমতায় ছিলেন। আমরা পৃথিবীর বুকে বহু স্বৈরশাসককে আমরা চিনি। তাদের ওপর বহু বই আছে। কিন্তু কোন স্বৈরাচারকে আমরা কখনও বলতে শুনিনি আমার ক্ষমতা দরকার। আমাদের দেশের স্বৈরাচার কখনও বলেনি আমার মানুষের ভালবাসা দরকার, উন্নয়ন দরকার। কখনও তিনি বলেনি মানুষ খেতে পাচ্ছে না, আমি খাবার তুলে দিতে চাই। আমরা শুনেছি তিনি বলেছেন আমার ক্ষমতাটাই দরকার। এমন ক্ষমতালোভী কোন স্বৈরাচার ছিল না।
তিনি আরও বলেন, এই নারায়ণগঞ্জের মানুষের দুঃখ। যারা নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা, এই শীতলক্ষ্যা কত সুন্দর। এই সোনারগাঁ বাংলাদেশের রাজধানী ছিল। এগুলোর জন্য নারায়ণগঞ্জকে মানুষ চেনে না। পাটের ব্যাবসার কারণে এই নারায়ণগঞ্জকে প্রাচ্যের ড্যান্ডি বলা হত, সেটা দিয়েও মানুষ নারায়ণগঞ্জকে চেনে না। চিনত গডফাদারকে দিয়ে। মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলত খেলা হবে। আজ সে কোথায়। গডফাদার বলত তুই খারাপ আর গডমাদার বলত তুই খারাপ। এগুলোই চলত এই নারায়ণগঞ্জে।
তিনি আরো বলেন, লজ্জা থেকে নারায়ণগঞ্জবাসীকে মুক্তি দিন। নারায়ণগঞ্জ তার শিল্প ও সংস্কৃতি দিয়ে পরিচিতি পাক। কোন কুখ্যাত গডফাদার, গডমাদার দিয়ে নারায়ণগঞ্জ পরিচিতি পাবে সেটা হতে পারে না। নারায়ণগঞ্জকে একটি ব্যাবসায়িক হাব হিসেবে গড়ে তুলুন। এটাকে শিল্প ও সাহিত্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলুন।
কর্মী সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান।