রূপগঞ্জের রবিনটেক্সে শ্রমিক নিপীড়নের অভিযোগে বিক্ষোভ সমাবেশ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রবিনটেক্স গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শ্রমিক নিপীড়নের অভিযোগ এনে এবং শ্রমিক নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাস, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হোসেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট সভাপতি জামাল হোসেন, এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা মোটরযান মেকানিক ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম।
নেতারা অভিযোগ করেন, শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার সাংবিধানিক অধিকার হরণ করতে রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের সহযোগিতায় শ্রমিক ইউনিয়ন নির্মূলের চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা বলেন, গত ১৫ এপ্রিল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ফতুল্লার নিজ বাসা থেকে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ-কে সেনাবাহিনী দরজা ভেঙে গ্রেপ্তার করে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করে। গ্রেপ্তারের সময় কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল না এবং তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও অশোভন আচরণ করা হয়।
নেতৃবৃন্দ জানান, সেলিম মাহমুদের নাম মামলায় উল্লেখ না থাকলেও শুধুমাত্র শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং আইনি সহায়তা দেওয়ার কারণে তাকে পূর্বের মামলায় যুক্ত করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে ৮ এপ্রিলের আন্দোলন দমন করতে ৭৮ জনের নামসহ অজ্ঞাত কয়েকশো শ্রমিককে আসামি করে মামলা দায়ের করে রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ, যার একটি মামলায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে ১৩ মার্চ নির্দেশনা থাকলেও ২৯ মার্চ রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ ১৬ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে, যা সরকারের নির্দেশনা এবং শ্রম আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। ইউনিয়ন নিবন্ধনের আবেদন বিচারাধীন থাকা অবস্থায় নেতাদের ছাঁটাই করার চেষ্টাও শ্রম আইনের পরিপন্থী।
নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অবিলম্বে সেলিম মাহমুদ ও রবিনটেক্সের গ্রেপ্তারকৃত সকল শ্রমিককে নিঃশর্ত মুক্তি, দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহাল করতে হবে। অন্যথায় সারাদেশে মালিকপক্ষ ও প্রশাসনের অসৎ শ্রম আচরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও বেগবান করা হবে।