১৫ এপ্রিল ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ১২ এপ্রিল ২০২৫

রুপগঞ্জের রবিনটেক্স গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মানববন্ধন

রুপগঞ্জের রবিনটেক্স গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মানববন্ধন

রুপগঞ্জের রবিনটেক্স গার্মেন্টসের শ্রমিকদের ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি, ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শ্রমিকরা। শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

গার্মেন্টস শ্রমিক নাঈমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি রুহুল আমিন সোহাগ, কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার সভাপতি আনোয়ার খান প্রমুখ।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, রুপগঞ্জের রবিনটেক্স গার্মেন্টসে কর্মরত শ্রমিকরা একটি ইউনিয়ন গঠন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল, কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রভাব বিস্তার করে ইউনিয়নের নিবন্ধন বাধাগ্রস্থ করতে এবং ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দকে চাকরিচ্যূত করার জন্য অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না হওয়া সত্ত্বেও কারখানা কর্তৃপক্ষ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তাওহিদকে শ্রম আইনের ২৬ ধারার অবৈধ প্রয়োগে জোর করে চাকরিচ্যূত করে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে শ্রম অধিদপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ আরও জানান, ইউনিয়ন নিবন্ধনের বিষয়টি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ ইউনিয়নকে দুর্বল ও নেতৃত্বশূন্য করার জন্য কয়েকটি অধিকার সচেতন শ্রমিককে নিয়মিতভাবে ২৬ ধারার অজুহাতে চাকরিচ্যূত করতে থাকে, যা প্রমাণ করে যে, কারখানা কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে নিপীড়নমূলক শ্রম আচরণের মাধ্যমে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে।

১০ এপ্রিল থেকে ১৩(১) ধারার অপব্যাখ্যা করে আকস্মিকভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা, ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দসহ অর্ধশতাধিক শ্রমিকের নাম উল্লিখিত করে এবং কয়েকশো অজ্ঞাত শ্রমিককে আসামী করে মিথ্যা মামলা দায়ের করা, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ২২ জন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা, কারখানা কর্তৃপক্ষের ইউনিয়ন দমনের চক্রান্তের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া ও দরকষাকষির মৌলিক অধিকার হরণের উদ্দেশ্যে রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের উপর চালানো দমনমূলক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাঁরা দাবি করেন, অবিলম্বে রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ গ্রেপ্তারকৃত সকল শ্রমিকদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে, দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং কারখানা খুলে দিয়ে সকল শ্রমিককে কাজে যোগদানের সুযোগ দিতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার হরণ করার প্রচেষ্টা শোভন কাজের শর্ত এবং সংবিধান বিরোধী। প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনির যারা কারখানা মালিকের দমন নীতি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছেন, তা শান্তিপূর্ণ শিল্প-সম্পর্ক বিকাশের নীতির পরিপন্থি এবং শোভন কাজের শর্ত ও সংবিধান লঙ্ঘন করছে। শ্রমিকের স্বীকৃত অধিকার সম্পূর্ণ দমিয়ে রাখার এই চেষ্টা সফল হবেনা, আর এই ধরনের কাজ অব্যাহত থাকলে তা সমগ্র শিল্পের জন্য বুমেরাং হয়ে উঠতে পারে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়