বকেয়া বেতনের দাবিতে ফতুল্লা ফ্যাশন শ্রমিকদের মানববন্ধন
৩ মাসের বকেয়া বেতন ও আইনানুগ পাওনা পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ফতুল্লা পোস্ট অফিস রোডে অবস্থিত ফতুল্লা ফ্যাশন লিমিটেড এর শ্রমিক-কর্মচারীরা। বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ফতুল্লা ফ্যাশনের কর্মচারী জামাল হোসেন, সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এম এ শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ওই কারখানার কর্মচারী সরোয়ার হোসেন ও শ্রমিক তানিয়া আক্তার প্রমুখ।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ফতুল্লা ফ্যাশন লিমিটেড এর মালিক শ্রম আইন লঙ্ঘন করে প্রতি মাসে শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে টালবাহানা করেন। মাসের পর মাস শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বকেয়া রাখা বদভ্যাসে পরিণত হয়েছে। গত জুলাই মাসের হাফ বেতন বকেয়া রেখে আগস্ট-সেপ্টেম্বর-অক্টোবর পর্যন্ত বকেয়া পড়েছে। শ্রমিক কর্মচারীরা গত ৩ মাস যাবত বেতন-ভাতা না পেয়ে না খেয়ে মরার অবস্থা তৈরি হয়েছে। অসহায় শ্রমিক কর্মচারীরা বকেয়া বেতন আদায়ে নারায়ণগঞ্জের কলকারখানা অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শকের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছ। অভিযোগের ভিত্তিতে কলকারখানা অধিদপ্তর মালিক কর্তৃপক্ষ কে উক্ত দপ্তরে হাজির হয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের জন্য লিখিত নোটিশ করেন। কিন্তু মালিক উক্ত সরকারি দপ্তরের নোটিশ উপেক্ষা করে হাজির হয়নি। বিকেএমইএ সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর জুলাই মাসের হাফ বেতন প্রদান করেছে। কিন্তু ৩ মাসের বেতন বকেয়া রেখে আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে গত ২৯ অক্টোবর বে-আইনিভাবে বিনা নোটিশে কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও আইনানুগ পাওনা পরিশোধের কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ফতুল্লা ফ্যাশনের মালিক বিকেএমইএ'র সহ-সভাপতি এহসান সাহেব এর ভাই হওয়ার সুবাদে গড়িমসি করছে। বিপদগ্রস্থ অসহায় শ্রমিক কর্মচারীরা পাওনা আদায়ের জন্য দপ্তরে দপ্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। 'বিকেএমইএ' সভাপতি ফতুল্লা ফ্যাশনের শ্রমিক কর্মচারীদের সংকট সমাধানের জন্য সহ-সভাপতি এহসান সাহেব কে দায়িত্ব দিয়েছেন। কারখানার মালিক উনার ভাই হওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত সংকট নিরসনের লক্ষে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করে নাই। এই অবস্থা চলতে পারে না। শ্রমিক কর্মচারীদের ঘরে খাবার নেই। মুদি দোকানদার চাল ডাল দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বাকীর টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। বাড়িওয়ালা ঘর ভাড়ার টাকা দেয়ার জন্য অপমান অপদস্ত করছে। এ অবস্থায় তাঁদের জীবন বাঁচানোর কোন উপায় নেই।
অবিলম্বে ফতুল্লা ফ্যাশন লিমিটেড মালিকের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নিয়ে শ্রমিক কর্মচারীদের ৩ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা ও আইনানুগ যাবতীয় পাওনা আদায়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলে পাওনা আদায়ের হুশিয়ারি দেন নেতৃবৃন্দ।