নারায়ণগঞ্জ কলেজের ময়লার ভাগাড় এখন ফুলে ফুলে সুশোভিত
সাইদুল করিম নিশাত (প্রেস নারায়ণগঞ্জ): এক পশলা বৃষ্টি দিয়ে দিনের শুরু। নগরের কোলাহল ঠেলে এসে পৌছালাম নগরের মীর জুমলা সড়কে। বৃষ্টি নেই বললেও চলে। নয়নতারার পাতায় তখনও লেগে ছিলো বৃষ্টির জল। হালকা বাতাসে নয়নতারা গা দুলিয়ে স্বাগতম জানালো। বেলী, কামিনীর ঘ্রাণে ভরে গেছে চারপাশটা। কোন পার্ক বা ফুলের দোকানের কথা বলছি না। বলছি নারায়ণগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাসের কথা।
করোনাভাইরাস আতঙ্কে থমকে আছে শহর। সীমিত পরিসরে জনসমাগম শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের সমাগমহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। আর এ সময়টিকে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের রীতিমতো অবাক করে দেয়ার মতোই একটি কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কলেজের নতুন সাত তলা ভবনের পাশে থাকা ময়লার ভাগাড়টিকেই সুসজ্জিত বাগান হিসেবে গড়ে তুলেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সবুজ ক্যাম্পাস গড়ে তোলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নানা ধরণের ফুল, ফল ও ঔষধি গাছে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ক্যাম্পাস। যা প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় সচল হবার পর যেকোনো শিক্ষার্থীকে মুগ্ধ করবে।
সম্প্রতি সরেজমিন কলেজ প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায় গোলাপ, গন্ধরাজ, শিমুল, টগর, জবা, হাসনাহেনা, বাগানবিলাস, ঝুমকা, বেলী, শেফালী, কাটামুকুট, নয়নতারা, কসমস, কামিনী, নীলকন্ঠ, পলাশসহ হরেক রকমের ফুল।
চলতি বছরের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকীতে কলেজ ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সে কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ কলেজকে সবুজ ক্যাম্পাসের আওতায় নিয়ে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন কলেজের গভর্নিং বোর্ডের সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান। সেই পরিকল্পনারই বাস্তবায়ন করা হয়েছ করোনাকালে। এমনটি জানালেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফজলুল হক।
এই উদ্যোগের প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে কলেজ ভবনের প্রায় ২০ হাজার স্কয়ার ফুট ছাদজুড়ে ছাদকৃষি করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। যেখানে যুক্ত থাকবে প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীরা। এই ছাদকৃষির মাধ্যমে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অনুপ্রাণিত হবে বলে আশাবাদী এই অধ্যক্ষ।
তবে ক্যাম্পাসকে সবুজায়ন করার পথে প্রতিবন্ধকতাও আছে। কলেজ মসজিদের পাশে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কিছু জায়গায় দীর্ঘদিন যাবৎ অকেজো যন্ত্রপাতি পড়ে আছে। যার কারণে জায়গাটি পরিত্যক্ত হয়ে ময়লার স্তুপে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার ৩ থেকে ৪ মাস কেটে গেলেও গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতেও দেখা মেলেনি গণপূর্ত অধিদপ্তরের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ। যোগ করেন অধ্যক্ষ ফজলুল হক।
বাগানের এই পরিচর্যা কার্যক্রমের সাথে শুরু থেকে যুক্ত প্রহরী মিঠুন চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, মূলত আমার কাজ হইলো দারোয়ানগিরি। আগের থেকে গাছের প্রতি আমার একটা আগ্রহ আছে। যখন থেকে এই বাগানের উদ্যোগ নেওয়া হলো প্রথম থেকেই আমি আগ্রহ দেখাই। বাগান পরিচর্যার কাজ করতে আমার ভালোই লাগে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাজের ফাঁকে ফাঁকে বাগানের পরিচর্যা করেন মিঠুন।
প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম