০৩ নভেম্বর ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:১১, ১৯ মে ২০২৪

সোনারগাঁয়ে রেকর্ড ভোটার উপস্থিতির প্রত্যাশা 

সোনারগাঁয়ে রেকর্ড ভোটার উপস্থিতির প্রত্যাশা 

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের কোথাও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ছাড়া ভিন্ন কোন দলের প্রার্থী নেই। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বর্জন করা এক দলীয় এই ভোটে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সোনারগাঁ উপজেলা। প্রথম ধাপে বন্দর উপজেলায় মোট ভোটারের মাত্র ৪৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। দ্বিতীয় ধাপে সোনারগাঁয়ে ভোটার উপস্থিতি আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

সোনারগাঁ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন চারজন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম (ঘোড়া প্রতীক), উপজেলার সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন ওমর (আনারস প্রতীক), উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম (মোটরসাইকেল প্রতীক) ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী হায়দার (দোয়াত-কলম প্রতীক)।

এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আবুল ফয়েজ (চশমা প্রতীক), এম জাহাঙ্গীর হোসেন ভূঁইয়া (টিউবওয়েল প্রতীক), মাছুম চৌধুরী (তালা প্রতীক) ও আজিজুল ইসলাম (মাইক প্রতীক)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফরিদা পারভীন (ফুটবল প্রতীক) ও মাহমুদা আক্তার (হাঁস প্রতীক) লড়ছেন।

তবে রূপগঞ্জ আড়াইহাজারের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন নিয়ে গঠিত সোনারগা উপজেলার ভোটের পরিস্থিতি। দুটি উপজেলার তুলনায় সোনারগায়ে প্রার্থী ও প্রচারপ্রচারণা দুটিই বেশি। অপর দুই উপজেলার তুলনায় এখানে ভোট নিয়ে ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে বেশি। এবারের নির্বাচনে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৪২ টি কেন্দ্রে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৬৩২ জন ভোটার ব্যালট পেপারে ভোট দেবে।

সোনারগাঁয়ে উপজেলার চার চেয়ারম্যান প্রার্থীর সবাই ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার (হাসনাত) নিজের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকের বাবুল হোসেনকে বেছে নিয়েছেন। তিনি তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীদের আনারস প্রতীকের প্রার্থী বাবুল হোসেনের পক্ষে প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটি অংশ নাখোশ।

বর্তমান সংসদ সদস্যই নন সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাও বাবুল হোসেনকে সমর্থন দিয়েছেন। তার অনুসারী নেতা-কর্মীরা এ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অপর দিকে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য মোবারক হোসেনের ছেলে এরফান হোসেন দ্বীপসহ আওয়ামী লীগের একাংশের সমর্থন পাচ্ছেন মাহফুজুর রহমান কালাম। 

উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এ বিভক্তি প্রকাশ্যে এসেছে। এ নিয়ে উপজেলায় উত্তেজনা চলছে। এরই মধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে থানায় দুটি সাধারণ ডায়রি, দুটি মানববন্ধন, একটি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। তবে শনিবার পর্যন্ত উপজেলার কোথাও কোন সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে ভোটারদের কেন্দ্রে না আসতে হুমকি, একজন আওয়ামী লীগ নেতার বংশ উচ্ছেদের হুমকি ও বিধি ভেঙ্গে শোডাউনের অভিযোগে দুই দফায় বাবুল ওমরকে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তা।

পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন, প্রার্থীদের বাক যুদ্ধ, পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধ প্রার্থীর প্রতি সমর্থন সব মিলিয়ে সোনারগাঁয়ে ভিন্ন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। এখানে ভোট নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ উৎসাহ লক্ষণীয়। ভোট গ্রহণের দিন শান্তি পূর্ণ পরিবেশ থাকলে জেলার সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি এই সোনারগাঁয়ে হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা। 

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাকিব আল রাব্বি বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোটের জন্য যা যা করনীয় আমরা তার সব রকম ব্যবস্থাই নিয়েছি। ভোট শতভাগ সুষ্ঠু হবে। আর পরিবেশ শান্ত থাকলে ভোটার উপস্থিতিও বাড়বে।’

সর্বশেষ

জনপ্রিয়