১২ মার্চ ২০২৫

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৪:৩৩, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৯:১৮, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মামলা ও কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে ইউরোটেক্সের শ্রমিকদের অবরোধ

মামলা ও কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে ইউরোটেক্সের শ্রমিকদের অবরোধ

বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে সাড়ে তিন ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন নারায়ণগঞ্জের রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা ইউরোটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেডের কয়েকশ’ শ্রমিক৷

সোমবার সকাল দশটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত শহরের চাষাঢ়া মোড়ে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও দু’টি সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন৷

এতে পুরো শহর যানজটে স্থবির হয়ে পড়েন, ভোগান্তি পোহাতে হয় জনসাধারণকে৷

বিক্ষুব্দ শ্রমিক ও শিল্প পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার নয়ামাটি এলাকার ইউরোটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড নামে কারখানাটি গত কয়েকমাস যাবৎ শ্রমিক অসন্তোষ চলছে৷ গত ১০ ফেব্রুয়ারি বকেয়া বেতন ও ন্যায্য পাওনা পরিশোধের দাবিতে কারখানাটির ভেতর বিক্ষোভ করেন একদল শ্রমিক৷ পরে আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত করে মালিকপক্ষ৷ গতকাল রোববার শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ সাঁটানো হয়৷

গতরাতে আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিকের বিরুদ্ধে কারখানায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে একটি মামলাও করা হয়েছে বলে জানান শ্রমিকরা৷ এরই প্রতিবাদে শ্রমিকরা সড়কে নেমে আসেন৷

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল দশটার দিকে কয়েকশ’ শ্রমিক চাষাঢ়ায় জড়ো হন৷ পরে তারা চাষাঢ়া মোড়ে অবস্থান নিলে আশেপাশের সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ জেলা ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা তাদের সড়ক ছেড়ে প্রশাসনের সাথে আলোচনায় বসে সমাধানের প্রস্তাব দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেন বিক্ষুব্দ শ্রমিকরা৷

অবরোধে অংশ নেওয়া শ্রমিক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে প্রিন্ট সেকশনের ২৭ জন শ্রমিককে বেতন না দিয়ে ছাঁটাই করা হয় এবং তাদের নামে কোটি টাকার মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়৷ পাশাপাশি হঠাৎ করে গার্মেন্টস বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ আমরা এর প্রতিবাদে আজকে রাস্তায় নেমেছি৷”

“কারখানা মালিক বন্ধ করে দিতেই পারেন কিন্তু তার আগে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করতে হবে৷ যতক্ষন না কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে একমত হবে ততক্ষন আমরা অবরোধ চালিয়ে যাবো”, যোগ করেন ওই শ্রমিক৷

সোমবার সকালে কারখানার সামনে অবস্থান নিতে চাইলে মালিকপক্ষের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের উপর চড়াও হন বলেও অভিযোগ করেন শ্রমিকরা৷

শাহজাহান নামে এক শ্রমিক বলেন, “গার্মেন্টসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ এনেছে৷ আমাদের নামে ভাঙচুরের অভিযোগ এনেছে৷ কিন্তু গার্মেন্টসে কোন ভাঙচুরের আলামত নেই। ছাটাইকৃত শ্রমিকদের পাওনা বেতন এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই।”

এদিকে, দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশের একটি দল শ্রমিকদের সাথে কথা বলে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হন৷ পরে মিছিল নিয়ে শ্রমিকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে যান৷

শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে বেলা দুইটার দিকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়৷

ঘটনাস্থলে থাকা ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম বলেন, “মালিক-শ্রমিক উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। দু’পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি। পরে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেয়াসহ মামলা তুলে নেওয়ার আশ্বাস দেয়ায় স্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছে। এরপর থেকে সড়কে যান চলাচক শুরু হয়েছে৷”

সর্বশেষ

জনপ্রিয়