রমজানের আগে টিসিবির পণ্য পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ

আসন্ন রমজান মাসের আগে নিম্ন আয়ের জনগণের জন্য বরাদ্দ টিসিবির ন্যায্য মূল্যে পণ্য পাওয়ার দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে প্রায় অর্ধশতাধিক ভোক্তা। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টায় নারায়াণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে প্রায় ১ ঘন্টা বিক্ষোভ ও পরে বঙ্গবন্ধু সড়কের মিছিল করে নগর ভবনে গিয়ে অবস্থান নেয় তারা।
বিক্ষোভকারীরা জানান, টিসিবি কার্ডের মাধ্যমে তারা নিয়মিত ন্যায্য মূল্যে পণ্য কিনেন। কিন্তু অন্তবর্তী সরকার আসার পর সে কার্ড বাতিল করে স্মার্ট কার্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ কারণে গত দুই মাস কাউকে পণ্য দিচ্ছে না টিসিবি। এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সব ওয়ার্ডে এখনো স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়নি। কবে নাগাদ স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে এবং গত দুই মাসের পণ্য কবে দিবে তাও বলছে না কর্তৃপক্ষ।
ভোক্তা মো. রোকন উদ্দিন বলেন, জানুয়ারি থেকে আমরা পণ্য পাই না, আগের কার্ড বাতিল করার ফলে পণ্য পাচ্ছি না এবং সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সামনে রমজান মাস। এ সময় নিত্যপণ্যের দাম এমনিতেই বেড়ে যায়। এ মাসে টিসিবি পণ্য না পেলে আমাদের (গ্রাহক) উপর অতিরিক্ত চাপ পরবে।
নাজমা বেগম নামে এক নারী বলেন, কিছু ওয়ার্ডে স্মার্ট কার্ড দিচ্ছে। আমরা যখন ওয়ার্ড সচিবের কাছে কার্ডের জন্য যাই তখন তারা বলে, ‘পরে আসেন। এখন এনআইডি কার্ডের কাজ চলছে।’ তারা যদি বাকি কাজই করে তাহলে আমাদের টিসিবির কার্ড কবে দিবে? তাদের অবহেলার কারণে আামরা কেন ভোগান্তি পোহাবো? আমাদের দাবি, তারা অবহেলা না করে আমাদের টিসিবির কার্ড বিতরণে উদ্যোগী হোক। আর যদি না পারে তাহলে আগের কার্ড দিয়ে অন্তত জানুয়ারি মাসের পণ্যগুলো আমাদের দিক। আমরা খেয়ে বাঁচি।
নাসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ডের টিসিবি পণ্যের ডিলার মাসুদ পারভেজ বলেন, আমাদের কাছে জানুয়ারি মাসের পণ্যগুলো স্টক আছে। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন কার্ড দিচ্ছে না তাই আমরা গ্রাহকদের পণ্য দিতে পারছি না। প্রায় প্রতিদিনই গ্রাহকরা আমাদের দোকানের সামনে ভীড় করে। বারবার ফোন দিয়ে নানা রকম কথা বলে। সম্প্রতি ৭নম্বর ওয়ার্ডের একজন ডিলারকে মারধরও করা হয়েছে। এখানে আমাদের করার কিছুই নেই।
বিক্ষোভকারীরা পরবর্তীতে মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু সড়ক হয়ে সিটি করপোরেশনের অভিমুখে রওনা হয়। বেলা আড়াইটায় নগর ভবনে গিয়ে অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে তারা। এক পর্যায়ে সিটি করপোরেশনের লোকজন এসে বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলে এবং তাদের কয়েকজনকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে।
জানতে চাইলে নাসিক প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা কে এম ফরিদুল ইসলাম মিরাজ বলেন, টিসিবি’র ৭৮ হাজার স্মার্ট কার্ড আমরা হাতে পেয়েছি জানুয়ারি মাসেই। কিন্তু এসব কার্ড সফটওয়্যারের মাধ্যমে গ্রাহকের ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে একটিভেট করতে হয়। এর জন্য প্রত্যেক ওয়ার্ড সচিবকে টিসিবি তাদের সফটওয়্যারের একটি পাসওয়ার্ড দেয়, যা একটি ডিভাইসের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু টিসিবি পাসওয়ার্ড দিতে দেরী করছিল। গত ৩ ফেব্রুয়ারি আমরা পাসওয়ার্ড পেয়েছি।
নাসিকের সব কার্ড একটিভ করতে আরও ৩ মাস সময় লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, একজন ওয়ার্ড সচিবের অনেক কাজ থাকে। তার পক্ষে অন্যান্য কাজের পাশাপাশি হাজার হাজার টিসিবি কার্ড কয়েকদিনে একটিভ করা সম্ভব না। এর জন্য সময় লাগবে।