চুনকা পাঠাগারের উন্মুক্ত অংশ ভাঙার বিপক্ষে এলাকাবাসী
নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি এলাকায় আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগার ও মিলনায়তনের সামনের উন্মুক্ত অংশটি ভেঙে দেওয়ার দাবির বিপরীতে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বেলা বারোটার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীসহ একটি প্রতিনিধি দল পাঠাগার পরিদর্শনে আসলে স্থানীয়রা তাদের প্রতিক্রিয়া জানান।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, পাঠাগারের সামনের বারান্দার উন্মুক্ত এই অংশটি মূলত ফুটপাতেরই অংশ। পথচারীরা এই উন্মুক্ত অংশটি ফুটপাত হিসেবেই ব্যবহার করেন। শহরের বিভিন্ন অংশের ফুটপাত হকারদের দখলে থাকলেও এই স্থানটি এখনও সকলের জন্য উন্মুক্ত।
‘ব্যক্তিগত কোনো আক্রোশ বা একক কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থে’ এই স্থানটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে স্থানীয়রা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলবেন বলেও জানান তারা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের জেলা কমিটির সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন। তিনি প্রশাসককে বলেন, ‘শহরের ফুটপাতগুলো সব হকারদের দখলে। ডিআইটিতে পাঠাগারের সামনের এই অংশটি পাঠাগারেরই একটি অংশ। কিন্তু এই অংশটি সবসময় উন্মুক্ত থাকে। এটিকে মানুষ ফুটপাত হিসেবে ব্যবহার করে। ফলে, এটিকে ভেঙে নতুন করে ফুটপাত বানানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি ভাঙা যাবে না। এটা যেভাবে আছে সেভাবেই ব্যবহার করে মানুষজন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
‘কিছু যদি করতেই হয় তাহলে শহরের দখল হয়ে যাওয়া ফুটপাতগুলোকে দখলমুক্ত করুন। অবৈধ স্ট্যান্ড ও পার্কিং বন্ধ করুন, এতে নগরবাসী স্বস্তি পাবে’, যোগ করেন তিনি।
এই সময় এলাকাবাসীর সামনে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এএইচএম কামরুজ্জামান বলেন, এই স্থানটি ভাঙার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যেহেতু জায়গাটি নিয়ে একটি দাবি উঠেছে এবং শহরে গভীর ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে, ফলে তারা পর্যবেক্ষণের জন্য এসেছেন। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ১৮ জানুয়ারি সকালে ‘আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’ নামে একটি নাগরিক সংগঠনের পক্ষ থেকে চুনকা পাঠাগারের বারান্দার বর্ধিতাংশ ভেঙে দেওয়ার দাবি তুলে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। চুনকা পাঠাগারের বারান্দার উন্মুক্ত বর্ধিতাংশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। তারা একই দাবিতে সিটি কর্পোরেশনে লিখিতও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিকেলে যোগাযোগ করা হলে সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘চুনকা পাঠাগারের সামনের অংশটি মূলত ফুটপাতেরই অংশ। সেটি সবসময় উন্মুক্তই থাকে। মানুষজন সেখান দিয়ে চলাচল করে। তাছাড়া, পাঠাগারের সামনের ফুটপাতের এ অংশের নিচে যে ড্রেনটি রয়েছে সেটি ফাংশনাল এবং অনেক গভীর। বঙ্গবন্ধু সড়কে যে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে তার থেকেও গভীর পাঠাগারের ফুটপাতের নিচের ড্রেন। ফাংশনাল জায়গা থেকে পাঠাগারের ওই অংশে ভেঙে নতুন করে ড্রেন নির্মাণের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।’