মামলার আসামি ’ওসমান দোসর’ নিয়াজকে ধরে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ
নারায়ণগঞ্জে হেফাজত কর্মী হত্যা মাওলানা ইকবাল হোসেন হত্যা মামলার এক আসামিকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার পরও ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও পুলিশের ভাষ্য, ওই আসামি তাদের ‘রাডারে ছিল’ কিন্তু তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ইসদাইরের ওসমানী স্টেডিয়াম এলাকা থেকে নিয়াজ উদ্দিনকে (৫৫) হেফাজতে নেয় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলে ছিলেন ফতুল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোহান। নিয়াজ উদ্দিন সোনারগাঁয়ে হেফাজত কর্মী ইকবাল হত্যা মামলার ২৯ নম্বর আসামি। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে করা মামলারও আসামি। হেফাজতে নেওয়ার পরও একাধিক মামলার এই আসামিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নিয়াজ উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন। তিনি শামীম ওসমানের বন্ধু টিপুর শ্যালক।
জানতে চাইলে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়াজ উদ্দিন নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমাদের থানাতেও মামলা আছে। উনি আজ আমাদের রেঞ্জে ছিল। কিন্তু তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি। আমরা তাকে অবজারভেশনে রাখছি, তাকে হেফাজতে নেইনি। যাচাই-বাছাই না করে যাকে-তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা রয়েছে।’
হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার না করে অবজারভেশনে রাখা যায় কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্দেশনা আছে, সেই মোতাবেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
সোনারগাঁ থানার মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল এক নারীসহ সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে অবরুদ্ধ হন হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। তাকে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে পুলিশ ও হেফাজত কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আহত হেফাজত কর্মী ইকবাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইকবালের মৃত্যুর ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন আরেক হেফাজত কর্মী শাহজাহান শিবলী। ওই মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য, তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপারসহ ১২৮ জনকে আসামি করা হয়। মামলার ২৯ নম্বর আসামি নিয়াজ উদ্দিন।
হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার না করে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে মহানগর হেফাজতে ইসলামের সাবেক সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, ‘একজন হত্যা মামলার আসামিকে তো কোনোভাবেই ছেড়ে দেওয়া যায় না। এইটাতে আইনের ব্যত্যয়।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘এমন বিষয় আমার জানা নেই। এই বিষয়ে খোঁজখবর করা হবে।’