নৌ পরিবহন উপদেষ্টার আশ্বাসে গাছ ও নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির বিবৃতি
বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নির্মাণাধীন প্রকল্প পরিদর্শনে আসেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় শীতলক্ষ্যা নদীর ৩নং ঘাটে এসময় তার সাথে সাক্ষাৎ ও দাবিনামা পেশ করেন শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ ও নদী রক্ষায় নারায়ণগঞ্জবাসী'র সমন্বয়কারী কবি আরিফ বুলবুল। আরও উপস্থিত ছিলেন গাছ ও নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব শুভ দেব, গণসংহতি আন্দোলনের জেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম, মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সহ সভাপ্রধান অঞ্জন দাস, প্রথম আলো বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিন্টু সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ ও নদী রক্ষায় নারায়ণগঞ্জবাসী'র সমন্বয়কারী আরিফ বুলবুল এবং সদস্য সচিব শুভ দেব যৌথ বিবৃতিতে বলেন, নৌ পরিবহন উপদেষ্টার আগমনের কথা আমরা পূর্বেই জানতে পেরেছিলাম। তাই তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করা এবং দাবিনামা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সকাল থেকেই আমরা সেখানে অবস্থান করি। ৩নং ঘাটকে কেন্দ্র করে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নির্মাণাধীন প্রকল্প নিয়ে যে আমরা প্রথম থেকেই বিরোধিতা করে আসছি সেটা তাকে জানাই। প্রথমে নারাজি হলেও পরবর্তীতে তিনি আমাদের কথা শোনেন এবং দাবিনামা গ্রহণ করেন। আশ্বস্ত করে বলেন, এই ব্যাপারটি তিনি গুরুত্বের সহকারে দেখবেন এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে নিজে সহ গিয়ে এই বিষয়ে আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় রক্ষা এবং নদীকে দূষণমুক্ত করার বিষয়ে উপদেষ্টা আমাদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
উল্লেখ্য, গত ২১শে ফেব্রুয়ারী থেকে আমরা এই বিষয়ে লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছি। প্রাচীন বটগাছ সহ অসংখ্য গাছ কর্তন, পরিবেশের ক্ষতি, মানুষ-পাখপাখালির আশ্রয়স্থলকে ধ্বংস এবং সর্বোপরি প্রকল্পের পুরো জায়গাটিকে অবরুদ্ধ করে জনসাধারণের অবকাশ যাপনের স্থানকে সংকুচিত করার বিষয়টিগুলোকে আমরা বিরোধিতা করছি। আমরা নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, তৎকালীন মেয়র, বিআইডব্লিউটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর, বন বিভাগকে স্মারকলিপি দিয়েছি। আমাদের দাবিনামা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছি। সভা সমাবেশ, বৃক্ষ রোপন, সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ, সাইকেল র্যালি, চিত্র প্রদর্শনী, পারফরম্যান্স আর্টের মতো কর্মসূচি একের পর এক পালন করে গেছি। আর তাতে স্থানীয় মানুষ সহ নারায়ণগঞ্জবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন আমরা লক্ষ্য করেছি। কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার কারো কোন কথায় কর্ণপাত না করে প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেয়।
আমরা নৌ পরিবহন উপদেষ্টার বক্তব্যে আশ্বস্ত হতে চাই। আমরা শীতলক্ষ্যার পানিকে পানযোগ্য অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চাই। ছাত্র-জনতার রক্তের উপর দাঁড়িয়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে, তারা আশা রাখি জনতার কথা শুনবেন। কোনপ্রকার ফ্যাসিবাদী আচরণ আমরা এবার দেখতে চাই না। আর তিনি যদি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে ব্যর্থ হন তাহলে আমরা পুনরায় আন্দোলনের দিকে যাবো।