সিদ্ধিরগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ করায় ওই নারীর ছোটবোনকেও মারধর করা হয়। এতে তার গর্ভপাত হয় বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগী নারীর।
এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার ভুক্তভোগী নারী সিনথিয়া আক্তার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে তার স্বামীসহ ৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত সিনথিয়ার স্বামী জাহিদ মোল্লা সিদ্ধিরগঞ্জের দুই নম্বর ঢাকেশ্বরীর এলাকার মৃত হাসেম মোল্লার ছেলে।
অভিযোগে সিনথিয়া আক্তার বলেন, চার বছর আগে জাহিদের সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলে রয়েছে। মাদকে আসক্ত সিনথিয়ার স্বামী যৌতুকের জন্য প্রায়ই তাকে মারধর করতো। গত সোমবার দুপুরে নারী নির্যাতনের অভিযোগে তিনি আদালতে একটি মামলা করেন। ওই রাতে জাহিদ আবারও তাকে মারধর করে।
‘আমাকে মারধর করে বলে, আমার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক নিয়ে আসতে। এই সময় আমার ছোটবোন নুসরাত আমার বাসায় ছিল। সে যখন আমাকে মারধরের প্রতিবাদ করে তখন তাকে আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার ছোটবোনকে মারধর করে’, অভিযোগ করেন ওই নারী।
এ সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জানান সিনথিয়া।
তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী নেশাগ্রস্ত এবং নিয়মিত জুয়া খেলে। বিয়ের সময় তার পরিবার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চেয়েছিল আমার পরিবার তা দিয়েছে। বিয়ের পরও যৌতুক দাবি করতো। বাচ্চাটার মুখ চেয়ে সবকিছু সহ্য করেছি। এখন যৌতুকের জন্য মারধর করে যা সহ্য করার মতো না। যার জন্য কাউকে না জানিয়ে একটি মামলা করি। ওইদিন রাতেই আমার স্বামী ও তার পরিবার আমাকে, আমার ছোটবোনকে মারধর করে এবং আটকে রাখে।
‘আমার বোন দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। ওইদিন আঘাত হওয়ার পর থেকে তার রক্তপাত হচ্ছিল। আজ চিকিৎসক জানিয়েছেন, নুসরাতের অনাগত সন্তান আর বেঁচে নেই। নুসরাতের স্বামীকে এখনো খবরটা দিতে পারিনি। কোনমুখে তাকে এই সংবাদটা দিবো তাও জানি না। আমরা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ ওই নারীর। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।’