বিএনপিকে জড়িয়ে দেয়া সেলিম প্রধানের বক্তব্য নাকচ করল শিক্ষার্থীরা
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকদের তৈরি করা সংগঠন প্রগতি এসোসিয়েশন বাংলাদেশ কার্যালয়ে আগুনের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে দেয়া ক্যাসিনো কাণ্ডে বিতর্কিত সেলিম প্রধানের বক্তব্য নাকচ করে শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সংগঠক আলিমুল ইসলাম সিফাত, প্রগতি এসোসিয়েশনের সভাপতি জিজান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি সজীব মিয়া, দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বিপ্লবী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিহাদ হোসেন রিয়াদ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আলিমুল ইসলাম সিফাত ও জিজান মোল্লা সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
আলিমুল ইসলাম সিফাত তার বক্তব্যে বলেন, প্রগতি এসোসিয়েশন বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে সমাজের নানা মানবিক বিষয় নিয়ে কাজ করে আসছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে রূপগঞ্জের যে সংগঠনটি আন্দোলনকারীদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল তা হলো এই প্রগতি এসোসিয়েশন। আন্দোলনের আগে ও পরে রাষ্ট্র গঠনের কাজে এই সংগঠনের কার্যালয়ে বসেই সংগঠকরা নিজেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। শুক্রবার রাতে সেই সংগঠনটিকেই পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
আগুনকে অস্বাভাবিক ঘটনা উল্লেখ করে সিফাত বলেন, এই আগুন ষড়যন্ত্রমূলক। একই সঙ্গে এটাও মনে করি রূপগঞ্জে ফ্যাসিবাদের দোসররা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত। আমরা দেখতে পাচ্ছি, অগ্নিকাণ্ডের পরেও আমাদেরকে কেন্দ্র করে এক ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কেউ কেউ শিক্ষার্থীদের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে নিজেদের ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছেন। যেমন রূপগঞ্জের সেলিম প্রধান ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ থেকে সাংবাদিক নিয়ে এসে এখানে বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, এবং গোলাম ফারুক খোকনকে দায়ী করেছেন।
আমরা বলতে চাই, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমাদের কোন বিরোধ নেই। ফলে তারা এই কাজ করেছে বা করবে বলে আমরা মনে করি না। তাছাড়া তদন্ত চলাকালীন সময়ে ঘটনাকে একদিকে নিয়ে গেলে, ষড়যন্ত্রে জড়িত প্রকৃত দোষীরা ছাড় পেয়ে যেতে পারেন। তাঁদের খুঁজে বের করা ব্যহত হতে পারে। সেলিম প্রধানের এই বক্তব্য একান্তই তার ব্যক্তিগত। আমরা শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার জন্য গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিকে দায়ী মনে করি না। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
ফলে আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি অনতিবিলম্বে তারা যেন এই আগুনের রহস্য উদঘাটন করেন। দোষীরা যে দল বা মতেরই হোক তাদের যেন শাস্তির আওতায় আনেন।
অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিপূরণ ও সুষ্ঠু তদন্ত করে দোসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন জিজান মোল্লা। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া, ভুলতা, গোলাকান্দাইল, তারাবো শিল্পাঞ্চালে ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন স্থাপন করতে হবে। প্রগতির আগুনের ঘটনায় পতিত সরকারের স্থানীয় দোসরাই জড়িত।
উল্লেখ্য গত ২৮ডিসেম্বর শনিবার ভোররাতে দুর্বৃত্তরা মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঙ্গলখালী এলাকায় অবস্থিত প্রগতি এসোসিয়েশন বাংলাদেশের(পিএবি) অফিসে আগুন দেয়। আগুনে অফিসের চেয়ার, টেবিল, ডেক্স, কম্পিউটার, সিলিং ফ্যান, প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও নগদ ১৫হাজার টাকাসহ তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ ব্যাপারে এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী সারোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।