কিশোরী অন্তঃসত্ত্বার ঘটনা ১৩ লাখ টাকায় রফাদফার অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় সৌদি প্রবাসী আব্দুর রবের বিরুদ্ধে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, এ ঘটনার ফলে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তবে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গত সোমবার একটি সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে অভিযুক্তের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকায় রফাদফা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলার নদীবেষ্টিত বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক মধ্যপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত আব্দুর রব সুযোগ পেয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। কিশোরীর মা না থাকায় সে অভিযুক্তের মেয়ের সঙ্গে থাকতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর জন্য সালিশ ডাকা হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান মিয়া ও আব্দুল কাদিরসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্তকে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জানা গেছে, ওই বৈঠকে ৩ লাখ টাকা নগদ দেওয়া হলেও ভুক্তভোগীর পরিবার এখনো কোনো অর্থ পায়নি। বাকি ১০ লাখ টাকা আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মো. শাহজাহান মিয়া বারদী ইউনিয়ন ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, আব্দুল কাদির বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয়রা আরও জানায়, সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে দুই বিএনপি নেতা নিজেরা ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের একজন সদস্য জানান, বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এখনো তারা কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি।
অভিযুক্ত আব্দুর রবের স্ত্রী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "আমার স্বামী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।" তবে কেন নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে, এ প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, "আমি সালিশি বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম, তবে অর্থ লেনদেন সম্পর্কে কিছু জানি না। ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছেছে।"
অন্য নেতা আব্দুল কাদির জানান, "আমরা অভিযুক্তকে ১৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দিয়েছি। তবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সঠিক নয়।"
সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, "এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"