কবর থেকে তোলা হলো ছাত্র আন্দোলনে নিহত স্বজনের লাশ
নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত আবুল হাসান স্বজনের (২৫) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
মৃত্যুর আড়াইমাস পর বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে নবীগঞ্জ কবরস্থান থেকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত উজ জামানের উপস্থিতিতে মরদেহ তোলা হয়। আবুল হাসান স্বজন বন্দর উপজেলার কুশিয়ারা গ্রামের জাকির হোসেনের ছোট ছেলে।
গত ৫ আগস্ট দুপুরে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার সময় চাষাঢ়ায় গুলিবিদ্ধ হন স্বজন। ওই সময় শহরে আন্দোলনরত লোকজনের উপর সশস্ত্র হামলা চালায় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অনুসারী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান তিনি। ওই সময় বিনা ময়নাতদন্তে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
মরদেহ উত্তোলনের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক ফারহানা মানিক মুনা বলেন, ‘আমরা আবুল হাসান স্বজনসহ নারায়ণগঞ্জের যত শহীদ হয়েছে এই আন্দোলনে, তাদের ন্যায় বিচার নিশ্চিতের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে আমাদের তৎপরতা অব্যহত রয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি বহু চিহ্নিত হত্যাকারীরা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা এখন আমাদের অন্যতম লড়াই।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক ফরিদ আহম্মদ বলেন, ‘মামলার তদন্তের জন্য আজকে লাশটি উত্তোলন করা হয়েছে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।’
গত ১৭ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে আবুল হাসান স্বজনের বড় ভাই আবুল বাশার অনিক বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, শ্যালক বিসিবি পরিচালক তানভীর আহমেদ টিটু, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ছোটভাই মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বল৷
এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও অন্তত ১৫০ জনকে আসামি করা হয়৷